স্কুল জীবনের গল্প পর্ব -১//by ripon40
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon40 বাংলাদেশের নাগরিক
- স্কুল জীবনের গল্প
- ০২, ডিসেম্বর ,২০২৪
- সোমবার
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি " স্কুল জীবনের গল্প " শেয়ার করছি । আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
আজকে আপনাদের সাথে স্কুল জীবনের একটি মজার ঘটনা শেয়ার করব। তখন আমরা ক্লাস নাইনে পড়ি সেই সময়কার একটা ঘটনা। স্কুল জীবনে প্রতিটা মানুষের সাথে অনেক মজার ঘটনা জড়িত থাকে যেগুলো কখনোই ভুলবার নয়। আমাদের সাইন্স ডিপার্টমেন্টের প্রধান ছিলেন বিমল স্যার। তিনি সাইন্সের দুইটা সাবজেক্ট নিতেন রসায়ন এবং গণিত। সেই সময় স্কুলে অনুপস্থিত থাকলে ফাইন দিতে হতো। একদিন স্কুল কামাই দিলেই দশ টাকা ফাইন। সেই সময় স্কুলে অনুপস্থিতি থাকলে তার আগে দরখাস্ত লিখে ছুটি নিতে হতো। অনেক সময় ছুটি দেওয়া হতো না যারা অনুপস্থিত হতো তাদেরকে দশ টাকা ফাইন দেয়া লাগতো।
আমি সেই সময় নিয়মিত স্কুলে যেতাম। আমরা যারা বন্ধু ছিলাম সবাই নিয়মিত স্কুলে আসতাম । মাঝে মাঝে অনুপস্থিত থাকতাম কিন্তু ইস্কুল কামাই খুবই কম দিতাম। আমাদের সাইন্স ডিপার্টমেন্ট যেহেতু বিমল স্যার পরিচালনা করেন। একদিন স্যার আমাদের একটা ভালো প্রস্তাব দেয়। যারা ক্লাসে অনুপস্থিত থাকবে তাদেরকে ২০ টাকা করে ফাইন দিতে হবে। অনেক বন্ধু বলল ৫০ টাকা আবার কেউ বলে ৩০ টাকা সর্বশেষ সিদ্ধান্ত হলো ২০ টাকা ফাইন দিতে হবে। আমরা সবাই স্যারের সাথে একমত প্রকাশ করলাম। স্যার, আমাদেরকে আবার প্রশ্ন করলো এই টাকা দিয়ে কি করা যায়? আমরা সকল বন্ধু নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে থাকলাম। সেদিন আমাদের ম্যাথ ক্লাস ছিল।
যেহেতু রসায়ন সাবজেক্ট বিমল স্যার নেবে। আমরা স্যার কে বললাম আলোচনার মাধ্যমে আমরা আপনাকে জানাবো এই টাকা দিয়ে কি করা যায়। স্যার বলল হ্যাঁ ভালো কথা তোমরা আলোচনা করো। আমরা অনেক সময় আলোচনা করার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিলাম বছর শেষে বর্ষাকালীন সময়ে আমরা এই টাকা দিয়ে নদীতে পিকনিক করবো। বর্ষাকালীন সময়ে নদীতে নৌকা ভ্রমন দেওয়া মজাই আলাদা। যেদিন আমরা আলোচনা করি সে দিন স্যার আমাদের ম্যাথ ক্লাস কিছু সময়ের মধ্যে শেষ করে চলে গিয়েছিল। এরপরে যখন স্যার আবার রসায়ন ক্লাস নিতে আসলো সেই সময় আমরা স্যারকে আমাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলাম। স্যার, আমাদের সাথে পিকনিক বিষয়ে একমত পোষণ করলেন। স্যার বলল তোমরা ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছো আমরা বছর শেষে যে টাকা হবে আর বাকি টাকা আমরা সবাই মিলে দিয়ে পিকনিক করব।
এভাবেই চলতে থাকে। যারা ক্লাসে অনুপস্থিত থাকে তারা এসে তাদের যে ফাইনের সেই টাকা আমাদের বন্ধুদের মাঝে একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তার কাছে দিয়ে দিতো। একতা অনেক বড় একটি জিনিস যেটা টিকিয়ে রাখা খুবই কঠিন। কয়েক মাসের মধ্যে আমাদের বন্ধুদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হয়। প্রাইভেট পড়া নিয়ে দুইটা গ্রুপ তৈরি হয় সেখানেই বাধে বড় বিপত্তি। আমাদের প্রিয় স্যার, বিষয়টি বুঝতে পেরে অনেক কষ্ট পায়। যারা বিভাজন সৃষ্টি করেছিল তারা আমাদের থেকে ভিন্নভাবে চলাফেরা শুরু করে। বছর শেষে আমাদের কাছে অনেকগুলো টাকা জমা হয়েছিল। আমাদের যে ইচ্ছাটা ছিল সেটা হয়তো এইবার পূরণ হবে। বর্ষাকালীন সময়ে আমরা স্যার কে রিকোয়েস্ট করি পিকনিক করার জন্য কিন্তু স্যার এ বিষয়ে কোনো কথা বলে না।
হঠাৎ একদিন আমাদের স্কুলের সকল স্যার ক্লাস টেনের বড় ভাইদের সাথে নৌকা ভ্রমণে চলে যায়। সেদিন আমরা সবাই অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম। দীর্ঘ একটি বছরের প্ল্যান যে আমরা এই সময় নদীতে নৌকা ভ্রমণ দিব সেই ইচ্ছাটা আমাদের পূরণ হলো না পূরণ হলো ক্লাস টেনের বড় ভাইদের। এর অনেকাংশ দায়ী আমরা নিজেরাই কারণ বন্ধুদের মধ্যে এই বিভাজন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। স্কুলের সিনিয়র স্যার তারা সেই পিকনিকে গিয়েছিল কিন্তু স্কুল চলমান ছিল। সেদিন স্কুলের তেমন ক্লাস হয়নি আমাদের সবারই মন খারাপ। সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করছি আর দুঃখ প্রকাশ করছি। তখন ১০ঃ০০ টা বাজে আমরা নয়টার মধ্যেই স্কুলে উপস্থিত হতাম। হঠাৎ প্রচন্ড বৃষ্টি শুরু হয়। আমাদের রেখে স্যার ক্লাস টেনের সাথে পিকনিকে চলে গিয়েছে বৃষ্টিময় দিনে আনন্দ তো দূরের কথা ভোগান্তি বেশি হবে । সেই উল্লাসে আমরা সবাই আনন্দ করতে থাকলাম। গল্পটি পড়তে পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকুন।
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি মোঃ রিপন মাহমুদ। আমার স্টীমিট একাউন্ট@ripon40। আমি একজন বাঙালি আর আমি বাঙালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। আমি স্টীমিটকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসি পড়তে, লিখতে, ব্লগিং,ফটোগ্রাফি,মিউজিক,রেসিপি ডাই আমার অনেক পছন্দের। আমি ঘুরতে অনেক ভালোবাসি। আমার সবচেয়ে বড় গুণ হলো কারোর উপর রাগ করলে সহজেই ভুলে যাই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনারা আলোচনা করে খুবই ভালো একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পিকনিকের। কিন্তু আপনাদের জন্যই আবার তা ভেস্তে গেলো। আপনাদের জায়গায় অন্যরা সেই সুযোগ পেয়ে গেল। যাই হোক পরবর্তীতে কি হয়েছিলো জানার অপেক্ষায় রইলাম। ভালো লাগলো পড়ে।
আসলেই দীর্ঘ এক বছরের ইচ্ছাটা পূরণ হলো না ।যেটা খুব দুঃখজনক ছিল যাই হোক ভাগ্যে যা থাকে সেই প্রাপ্তিটাই বড় প্রাপ্তি।
স্কুল জীবনে ক্লাস নাইনে পড়া সুন্দর স্মৃতি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আমাদের জীবনে অনেক রকমের স্মৃতি রয়েছে তবে স্কুল জীবনের স্মৃতি গুলো একটু মধুর ও ব্যতিক্রম। এমন ব্যবস্থা আমাদের সময় করা হয়েছিল এবং মাস শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পুরস্কার হিসেবে সে টাকা ব্যবহার করা হতো।