আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের প্রিয় বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে ভালই আছেন। আপনার ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন অন্তরের অন্তস্থল হতে কায়মনে এই প্রার্থনা। চারদিকে প্রচন্ড গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। দেখতে দেখতে আমরা রমজানের শেষ পর্যায়ে এসে গেছি। অনেকে আবার ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফিরছেন । সবাই যেন সুন্দরভাবে বাড়ি ফিরতে পারেন সেই দোয়া করি, সবাইকে আগাম ঈদ মোবারক।

এর আগে বেলের শরবত তৈরি রেসিপি আপনাদের নিকট শেয়ার করেছিলাম। এবার আনারসের শরবত নিয়ে আপনাদের নিকট উপস্থিত হলাম। বাসা হতে ফোন করে জানানো হল অফিস হতে ফেরার সময় যেন চারটি আনারস নিয়ে আসি। আনারসগুলো মিষ্টি ছিল। সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারের সময় আনারসের জুস খেয়ে পরিবারের সবাই খুব খুশী হয়। আনারসের রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ। সৃষ্টিকর্তার কর্তার অপার করুণা এই তীব্র গরমে আনারসের মত রসালো ফল পাওয়া যায়, একটা মানবজাতির জন্য একটা নেয়ামত। আনারস অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর একটি ফল । এটি কেবল সুস্বাদের জন্যই নয়, স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। হৃদ্রোগসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের বিরুদ্ধেও কার্যকরী ভূমিকা রাখতে আনারসের থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপকারী।
আমরা সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে নানা রকম ফল জুস কিংবা শরবত খেয়ে থাকি। নিশ্চয়ই অনেকে আনারসের শরবত খেয়েছেন । ইফতারি ছাড়াও এই গরমে আনারসের শরবত স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। বর্তমানে আনারসের মৈাসম চলছে এখন। এবার গরমে একবার আনারসের জুস পান করে দেখতে পারেন। চলুন দেখি কিভাবে আনারসের শরবত তৈরি করবেন।
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
উপকরণ | পরিমান |
আনারস | ১ পিচ (প্রয়োজনমত) |
বিট লবণ | পরিমাণমত |
লবণ | ২/৩ চিমটি |
চিনি | পরিমাণমত |
জিরার গুঁড়া | পরিমাণমত |
বরফ টুকরো | পরিমাণমত |
পানি | পরিমাণমত |
ধাপ-০১
প্রথমে আনারসটি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নেই।
.jpg)
ধাপ-০২
তারপর উপরের খোসা ভালভাবে কেটে নেই এবং টুকরো টুকরো করে একটি প্লেটে নিলাম।
.jpg)
ধাপ-০৩ঃ
এই ধাপে এসে আনারস, বরফকুচি, হালকা পানি, জিরার গুড়া, লবন ও চিনি দিয়ে মিশ্রণ করে ব্লেন্ড করি।

ধাপ-০৪ঃ
ব্লেন্ডার মেশিন হতে মিশ্রণটি আলাদা একটি জগে নিয়ে রাখলাম।

ধাপ-০৫ঃ
তারপর ছাকুনি দিয়ে ছেকে আলাদা করে পরিবেশন করি, কত সহজে বেলের শরবত/জুস তৈরি করলাম।




আনারসের জুস/শরবতের উপকারিতাঃ
মজাদার এই আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস। এসকল উপাদান আমাদের দেহের পুষ্টির অভাব পূরণে ও শক্তির যোগান দিতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
নিয়মিত আনারস খাওয়ার ফলে আমাদের হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়। কেননা, আনারসে রয়েছে ব্রোমেলিন জাতীয় উপাদান , যা কিনা আমাদের হজমশক্তিকে উন্নত করতে অনেকে এফেক্টিভ ।
** ক্রিমিনাশক হিসেবে আনারসের রস অনেক উপকারী। নিয়মিত আনারসের রস খেলে কৃমির উৎপাত বন্ধ হয়ে যায়। কৃমি দূর করতে সকালবেলায় খালি পেটে আনারস খেতে হবে।
** নিয়মিত আনারসের জুস পান ওজন কমাতে সহায়তা করে । কারণ এতে প্রচুর ফাইবার ও কম ক্যালরি আছে।
** দাঁতের মাড়ি শক্ত করতে এবং দাঁত শক্ত করতেও আনারসের ভূমিকা রয়েছে।
** আনারসে থাকা প্রোটিন ত্বকের মৃত কোষ দূর করে, ত্বককে কুঁচকে যাওয়া থেকে বাঁচায়। এছাড়া দেহের তৈলাক্ত ত্বক, ব্রণসহ সব রূপলাবণ্যে আনারসের ভেষজ গুণ রয়েছে।
আনারসের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াঃ
আমাদের দেশে একটি কুসংস্কার রয়েছে আনারস আর দুধ এক সাথে খাওয়া যায় না। বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত আনারস এবং দুধের মাঝে এমন কোন রাসায়নিক বিক্রিয়া খুঁজে পাওয়া যায়নি যার ফলে এদেরকে এক সাথে খেলে মানুষ মারা যাবে। বর্তমানে অনেক খাবারেই দুধ ও আনারস একসাথে মেশানো হয় এ। তবে কোন গ্যাস্ট্রিকের রোগী যদি খালিপেটে আনারসের সাথে দুধ খায় তাহলে তাঁর পেটে প্রচন্ড ব্যথা হতে পারে।
- আনারসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা থাকলেও এটি সবার জন্য সুখকর নাও হতে পারে। কারো কারো আনারসে এলার্জির সমস্যা যেমন বিভিন্ন ধরনের চুলকানি, ফুস্কুরি ইত্যাদি হতে পারে।
সর্বোপরি আনারস একটি সুস্বাদু ফল। যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। দেশের যেকোনো জায়গায় উপন্ন হয়। এটি দামে অনেক শাস্রয়ী।
আজকের মত এ পর্যন্তই। সকলের জন্য শুভকামনা রইল।
এই গরমে আনারসের শরবত আমাদের জন্য খুবই উপযুক্ত। গরম লাগা থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা করবেন। খুব সুন্দর করে আনারসের শরবত বানিয়েছেন। আমার খুব ভালো লাগলো আপনার এত সুন্দর কাজ দেখে।
ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
সত্যি বলতে কি আনারস জীবনে প্রচুর পরিমাণে খেলেও কখনোই এভাবে শরবত বানিয়ে খাইনি। আপনার রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে এটা খেলে আসলেই প্রাণটা জুড়িয়ে যেতো। বিশেষ করে গরমের দিনে ঠান্ডা কিছু খেলে অনেক ভালো লাগে। ধন্যবাদ সুন্দর একটি রেসিপির জন্য
আপনার মত আমিও পূর্বে খাইনি, তবে সারাদিন রোজা রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে আনারস ব্লেন্ডার করে শরবত বানিয়ে খেলে ভেতরটা একেবারে ঠান্ডা হয়ে যায়, পাশাপাশি নতুন শক্তি পাওয়া যায়। মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
আহা আনারসের শরবত! দুপুরবেলা এগুলো দেখলে কি ভালো লাগে আর !আপনার তো পেট ব্যথা করবে আমি যে দৃষ্টি দিচ্ছি।আনারসের শরবত বানাবেন ভালো কথা এত চমৎকার করে বানানোর কি দরকার আছে । আসলেই অনেক সুন্দর হয়েছে আপনার আনারসের শরবত। আপনি খুব সুন্দর ভাবে ধাপে-ধাপে বানানোর সিস্টেম দেখিয়ে দিয়েছেন। শুভ কামনা রইল
সালামুআলাইকুম, আপনার প্রতি অনেক অনেক শুভকামনা রইল,
এই গরমে আনারস খুবই পছন্দের একটি খাবার। তাছাড়া অনেক উপকারী ও বটে। গতকাল ইচ্ছে হয়েছিল আনারস কিন্তু ততটা ভালো দেখলাম না। আপনি আনারস দিয়ে অনেক সুন্দর ভাবে জুস তৈরি করেছেন। ভালো লাগলো আনারস দিয়ে শরবত তৈরি করার প্রক্রিয়া দেখে।
বড় আনারসগুলো বেশি একটা সুস্বাদু নহে, তবে রাঙ্গামাটির ছোট ছোট আনারস।গুলো অনেক সুস্বাদু হয়
জীবনে আনারস অনেক খেয়েছি এবং বর্তমানে আনারস অনেক পছন্দ করে থাকি। কিন্তু আনারসের শরবত জীবনে কখনো খাওয়া হয়নি। আপনার রেসিপি টা দেখে আইডিয়া পেয়ে গেলাম। ইনশাল্লাহ একদিন খাওয়া যাবে।
আনারস ঠান্ডা পানি দিয়ে ব্লেন্ডার করে জোস
খেলে অনেক ভালো লাগে।
এখানে এসে আমি অনেক নতুন নতুন রেসিপি শিখলাম ভাইয়া। আনারসের জুস দেখে অনেক লোভনীয় লাগছে। আনারস আমার অনেক পছন্দের একটি ফল। আনারসের জুস খেতে অনেক সুস্বাদু লাগে। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে প্রতিটি ধাপ এত সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন আপনি আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
আনারসের জুস এখনো খাওয়া হয় নায়,মানে আনারসের জুস কখনো চিন্তা করে দেখি নায়।আজকে আপনার মাধ্যমে দেখতে পেলাম খুবই ভালো ছিল।ধন্যবাদ ভাই আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য
সালমান ভাই ভালো আছেন, প্রশংসা করেছেন অনেক ধন্যবাদ, আসলে আনারসের শরবত অনেক সুস্বাদু এবং কলিজা শীতলকারী।