মায়ের ভালোবাসা|| by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ - ৩০শে বৈশাখ | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সোমবার | গ্রীষ্ম-কাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
কালকের দিনটা পুরোপুরি ব্যস্ততার মাঝে কেটে গিয়েছে ভোরবেলা বাসা থেকে বের হয়েছি আর রাত দশটার দিকে বাসায় ফিরেছি। সপ্তাহের একটা দিন এরকম ব্যস্ততার মাঝে পার করতে হয় তবে কালকের দিনটা যেন প্রতিটা সন্তানের কাছে একটু হলেও স্পেশাল ছিল। যখন ডিস্কোর্ড সার্ভারে এনাউন্সমেন্ট দেখলাম তখন বুঝতে পারলাম আজকে মা দিবস। তবে সারাদিন ব্যস্ত থাকার কারণে মায়ের সাথে বসে গল্প করা বা আড্ডা দেওয়া হয়নি। প্রতিদিনই বাড়িতে থাকলে কমবেশি আম্মুর সাথে বসে বিভিন্ন গল্প করা হয়। কারণ আমি আম্মুর সাথে একদম পুরোপুরি ফ্রেন্ডলি। আমার যে কোন ইচ্ছা যে কোন শখ আমি আম্মুর সাথে অনায়াসে শেয়ার করতে পারি। আসলে এই কথাগুলো কেন বলছি, সকালে যখন কমিউনিটিতে কয়েকটি পোস্ট পড়তে গেলাম তখন দেখলাম সবাই মাকে নিয়ে পোস্ট শেয়ার করেছে তখন মনে করলাম আমিও আমার আম্মুকে নিয়ে কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করি। পৃথিবীর যে মানুষটাকে আমি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি সেটা হচ্ছে আমার মা।
আসলে আমাদের এই পৃথিবীতে মায়ের বিকল্প নেই, সবাই কিন্তু আপনাকে ভালোবাসবে একটা স্বার্থ হাসিলের জন্য বা আপনি যেখানেই যে কাজ করেন আপনার একটা টার্গেট থাকবে বা একটা স্বার্থ থাকবে সেখানে। কিন্তু দেখবেন মা আপনাকে ভালোবাসে আপনার পাশে থাকে বিনা স্বার্থে। এমনকি সন্তান যদি কোন কারনে কষ্ট পায় তার পাশে থাকার চেষ্টা করে কোন কষ্টের কাজ করতে গেলে মা সেই কাজের ক্ষেত্রে সাপোর্ট দিবে। আপনি কোন অপরাধ করেছেন সেক্ষেত্রে পৃথিবীর সবাই আপনার বিরুদ্ধে যেতে পারে কিন্তু আপনার মা সবসময় আপনার পাশে থাকবে। এজন্যই তো মায়ের বিকল্প নেই, এমনকি ইসলাম ধর্মে ও মাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রাসুল (সা.)-কে এক সাহাবী প্রশ্ন করেছিলেন আপনি কাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন আমার মাকে, একই প্রশ্ন আবার করায় তিনি জবাব বলেছিলেন আমি মাকে বেশি ভালোবাসি। এরকম পরপর তিনবার বলার পরে তিনি চতুর্থ বার বাবার কথা উল্লেখ করেছিলেন।
তবে কালকে একটা মজার ঘটনা ঘটেছে। হয়তো সেটা সৃষ্টিকর্তার রহমত বলতে পারেন। হ্যাঁ কালকের দিনটা অনেক ব্যস্ততার মাঝে পার করেছি। যখন রাতের বেলায় বাসায় ফিরলাম তখন আম্মু আমাকে খেতে দিল কিন্তু আমি আম্মুকে যখন বললাম আমার একটু হাত কেটে গিয়েছে তখন আম্মু বিস্তারিত সবকিছু জিজ্ঞেস করলেন এবং আমি ঠিকঠাক উত্তর দিলাম। আমি আম্মুর কাছে চামচ চাওয়ার আগেই আম্মু বলছিল আচ্ছা তাহলে বস আমি তোকে খাইয়ে দিই। আম্মুর সাথে বসে বসে গল্প করছিলাম আর আম্মু আমাকে খাইয়ে দিচ্ছিল। আম্মু গল্পে গল্পে বলছিল আমার ছোট ভাই রিফাত আম্মুকে ফোন করে বলেছে আম্মু আই লাভ ইউ। আম্মু বারবার এটা বলছিল আর হাসছিল। তখন আমিও আম্মুকে বললাম দেখো কি কাকতালীয়ভাবে আজকেই আমার হাত কেটে গেল আর এই মা দিবসে তুমি আমাকে নিজের হাতে খাইয়ে দিচ্ছো। আজকের এই দিনটা যেন একটু বেশি স্পেশাল হয়ে গেল হা হা। আম্মু তখন হাসতে লাগলো, পরে চিন্তা করে দেখলাম আসলেই আজকে মা দিবসে অনেকদিন পরে আম্মু আমাকে নিজে হাতে খাইয়ে দিয়েছে।
তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এতটাই খারাপ লাগে যেটা আর মুখ ফুটে প্রকাশ করার মতো শক্তি থাকে না। দেশটা আগের চেয়ে অনেকটা উন্নত হয়েছে। অনেকেই চাকরি করছে নিজের জীবনটাকে সাজিয়ে গুছিয়ে নিয়েছে কিন্তু ভেতরের খোঁজ নিতে গেলে দেখা যাবে বাবা মায়ের প্রতি তার কোন ভালোবাসাই নেই। যে মা দিনের পর দিন কষ্ট করে চোখের ঘুম হারাম করে সন্তানকে বড় করে তুলে সেই মাকে শেষ বয়সে বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে হয়। এরকম ঘটনা চোখের সামনে অনেক দেখা যায় কিন্তু নিজে কষ্ট পাওয়া ছাড়া এখানে কিছুই করার থাকেনা। গ্রামের দৃশ্যপট লক্ষ্য করলে দেখা যাবে ছেলেরা বিয়ের কিছুদিন পরেই আলাদা হয়ে যায় শেষ বয়সে মা একা একা রান্না করে খায়। প্রতিটা মাই তো চায় শেষ বয়সে এসে তার সন্তানের সাথে, নাতি নাতনির সাথে সময় কাটিয়ে দিন পার করবে কিন্তু এরকমটা কজনের ভাগ্যে জোটে। যারা মায়ের ভালোবাসার গুরুত্ব দেয় না, মাকে শেষ বয়সে দূরে ঠেলে দেয় তাদের কি মনের মধ্যে একটুও মায়া কাজ করে না?? ছোটবেলায় মা তাদেরকে কত কষ্ট করে, কত আদর করে বড় করেছে সেটা কি তারা বড় হয়ে ভুলে যায়?? চোখের সামনে এমন দৃশ্য গুলো সামনে আসলে এ ধরনের অনেক প্রশ্ন মনে জাগে কিন্তু আমি উত্তর খুঁজে পাই না।
অনেক পরিবারে দেখেছি নিজে রাজকীয়ভাবে চলাফেরা করে কিন্তু মায়ের জন্য সামান্য কিছু টাকা খরচ করতে গেলে তার যেন অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যায়। যে মা জন্ম না দিলে পৃথিবীর আলো দেখতে পেতাম না সেই মায়ের প্রতি এমন অনীহা আসলেই মেনে নেওয়া যায় না। আমি চেষ্টা করি আমার মায়ের কথা মতো চলতে, আমার মা আমাকে যখন যে আদেশ করে সেই আদেশ গুলা মেনে চলতে। আমি মনে করি যে সন্তান শেষ বয়সে এসে মায়ের সেবা যত্ন করতে পারবে তার মতো ভাগ্যবান পৃথিবীতে যেন আর কেউ নেই। এই বিষয়ে ইসলাম ধর্মে কতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সেটা হয়তো অনেকেই জানেন। যদি অনলাইনে এসে মায়ের সম্পর্কে হাদিস গুলো পড়েন তাহলে বিষয়টা অবগত হতে পারবেন। যাইহোক দিনশেষে একটা কথাই বলতে চাই শুধু মা দিবসে নয় প্রতিটা দিনেই মায়ের প্রতি অঢেল ভালোবাসা অব্যাহত থাকুক। কেননা আপনি যদি ঠান্ডা মনে মায়ের সাথে কিছু সময় গল্প করেন দেখবেন আপনার মনের সব কষ্ট দূর হয়ে যাবে। যদি আমার নিজের ব্যক্তিগত কথা বলি সে ক্ষেত্রে আমার মনের কষ্টটা আমি সবসময় আম্মুর সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করি যেটার কারণে নিমিষেই মন হালকা হয়ে যায়। পৃথিবীর সকল মা ভালো থাকুক সুস্থ থাকুক, সকল মায়ের প্রতি অঢেল ভালোবাসা রইলো 💝
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।


VOTE @bangla.witness as witness

OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

আমি মোটামুটি ঐ স্যোসাল মিডিয়ার কল্যাণে জানতে পেরেছি মা দিবস সম্পর্কে। আমি ঐরকম কোন স্ট্যাটাস দেওয়া বা মা কে উইস করায় বিশ্বাসী না। আমি চাই নিজের জায়গা থেকে সবসময় তাকে খুশি রাখতে। আপনার পোস্ট টা পড়ে বেশ ভালো লাগল। আমি এমন অনেক কে দেখেছি যারা নিজেদের কে অনেক গুছিয়ে রাখে কিন্তু মা এর খবর রাখে না।
আসলে আমার মনে হয় মা দিবসের ভালোবাসার যে অনুভূতি সেটা প্রতিদিনই অর্থাৎ বছরের ৩৬৫ দিনেই মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো উচিত।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://x.com/KaziRai39057271/status/1789843771175133428
মা হচ্ছেন সৃষ্টিকর্তার দেওয়া আমাদের জন্য বড় উপহার। মায়ের ঋণ কোন ভাবেই শোত করা যাবে না। মা যখন থাকে আমরা হয়তো মায়ের মূল্য সেভাবে বুঝতে পারি না। তবে পৃথিবীতে চলে গেলে তখন বুঝতে পারি। অমূল্য সম্পদ হারিয়ে ফেলেছি। সারাদিন অনেক ব্যস্ত ছিলেন বুঝতে পারছি ভাই। সত্যি ভাই আপনার কাছে স্পেশাল একটি দিন ছিলো। মায়ের হাতে ভাত খাওয়ার মজাই আলাদা। পৃথিবীর সকল মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা। ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল মা।
ভাই মূল্যবান কোন কিছুর মূল্যই আমরা বুঝিনা যখন সেই মূল্যবান জিনিসটি আমাদের থেকে দূরে চলে যায় তখন আমরা তার অনুপস্থিতি বুঝতে পারি।
শুধু মাত্র নিজের মায়ের কাছেই আসল ভালোবাসা পাওয়া যায়।আর বাকি সব ভালোবাসা হচ্ছে স্বার্থের ভালোবাসা।আর মায়ের ভালোবাসা কখনো পূরনো হয় না, মায়ের ভালোবাসা সব সময় নতুন থাকে। বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে সন্তান হাজার টা ভুল করলেও মা কখনো সন্তান দূরে সরে দেন না। আপনি আজকে মায়ের ভালোবাসা নিয়ে খুবই সুন্দর একটি লেখা লিখেছেন। আপনার লেখা লেখা গুলো পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম।
মায়ের ভালোবাসা একদম ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের মত ভাই।
আসলে পৃথিবীতে মা এমন একজন ব্যক্তি বটবৃক্ষের মতো ছায়া হয়ে সব সময় পাশে থাকে। সকল দুঃখ কষ্টের মুহূর্তে নিজেকে ভালো রাখার চেষ্টা করে। হয়তো কখনো সেই বিষয়টি উপলব্ধি করি না যখন মায়ের অভাবটা বুঝতে পারি তখনই বিষয়টি উপলব্ধি করা হয় । সেজন্য মা দিবস উপলক্ষে সকল মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি । মা ও সন্তানের ভালোবাসায় পরিপূর্ণ থাকুক সেটাই কামনা করি। আপনি খুব সুন্দর আলোচনা করেছেন ভালো লাগলো পড়ে।
সুন্দর মতামত প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসলে মা এমন একজন যিনি আমাদেরকে জন্ম না দিলে আমরা এই পৃথিবীর আলো কখনোই দেখতাম না। সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসা অপরিসীম। মায়ের মতো ভালো আর কেউই বাসতে পারেনা। আসলে মাকে ভালোবাসার জন্য একটা দিন না সারা বছরই মাকে ভালোবাসা যায়। তবে এই দিনটা একটু স্পেশাল, তাই এটাকে অনেকেই নিজেদের মতো করে পালন করে। তবে আপনার ক্ষেত্রে যে ঘটনাটা ঘটেছে, এটা কিন্তু আমার কাছে দারুন লেগেছে। তবে একটা কথা না বললেই নয়, আমার আম্মুর হাতে কিন্তু মাঝেমধ্যেই আমার খাওয়া হয়।
ভাই কাকতালীয়ভাবে পুরোটা ঘটনা ঘটেছে তবে পরে বিষয়টা চিন্তা করতেই ভালো লাগছে।
দিনটা তো আসলেই অনেক স্পেশাল হয়ে গেল। আমি তো এখনো প্রায় সময় আম্মুর হাতেই খাই। এটার জন্য আম্মু অনেক বকাঝকা করে কিন্তু তারপরও আমি এসব কানে নেই না। আসলেই মায়ের বিকল্প কিছু নেই। আপনার লেখাগুলো পড়ে বেশ ভালো লাগলো। স্পেশাল দিনটা সম্পর্কে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলে আমরা যতই বড় হই না কেন মায়ের হাতে খাওয়ার যে আলাদা একটা তৃপ্তি সেটা বুঝতে পারি।
মা দিবসকে কেন্দ্র করে মায়ের ভালোবাসা নিয়ে আপনি অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আমাদের মাঝে। আসলে মায়ের ভালোবাসার তুলনা হয়না। যতক্ষণ না জীবিত ততক্ষণ মায়ের স্নেহ ভালোবাসা বিদ্যমান থাকে। খুবই ভালো লাগলো আপনার সুন্দর এই লেখা দেখে।
আপনার সুন্দর মতামত প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।