এখন মানুষে মানুষে মিলেমিশে থাকবার সময়। জেনারাল রাইটিং।
মানুষে মানুষে মিলেমিশে থাকবার সময়
🙏 সকলকে স্বাগত জানাই 🙏
আজকের পৃথিবীতে আমরা এমন এক সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছি, যেখানে বিভেদ নয়, প্রয়োজন একতা ও সহমর্মিতার। মানুষের জীবনের প্রকৃত সৌন্দর্যই হলো তার বহুত্বে। ভাষা, ধর্ম, বর্ণ, জাতি বা শ্রেণি। এই সব পার্থক্য সত্ত্বেও মানুষ একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, হাতে হাত রেখে চললেই মনুষ্যত্বের পূর্ণ বিকাশ ঘটে।
একসময় মানুষ বাঁচার তাগিদে সমাজ গঠন করেছিল, পরিবার তৈরি করেছিল, কারণ সে বুঝেছিল। একা নয়, দলবদ্ধ জীবনই টিকে থাকার শ্রেষ্ঠ পথ। আজকের বিশ্বায়নের যুগেও সেই সত্যই প্রাসঙ্গিক। শুধু টিকে থাকা নয়, পরিপূর্ণ জীবনযাপন, শান্তি, সৌহার্দ্য ও উন্নয়নের জন্য আমাদের প্রয়োজন মিলেমিশে থাকা, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা।
বিশ্বজুড়ে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, জাতিগত হিংসা, বর্ণবিদ্বেষ বা রাজনৈতিক বিভাজন দিন দিন বেড়ে চলেছে। এই বিভাজনের মাঝে বারবার প্রশ্ন জাগে। আমরা কি মানুষ হিসেবে নিজেদের মূল পরিচয় ভুলে যাচ্ছি না? মানুষ হিসেবে আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা মানুষ। হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ বা অন্য যেকোনো ধর্মের অনুসারী হওয়ার আগে আমরা একে অপরের সহযাত্রী।
আজকের সময়ে তাই খুব প্রয়োজন একসাথে থাকার মনোভাব। এই একসাথে থাকা মানে শুধু একই পাড়ায় থাকা নয়, বরং মানসিকভাবে যুক্ত থাকা, পরস্পরের যন্ত্রণায় সাড়া দেওয়া, অন্যের দৃষ্টিভঙ্গিকে শ্রদ্ধা করা। সমাজে সাম্য, ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠা তখনই সম্ভব, যখন আমরা একে অপরকে আপন ভাবি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পরিবার ও গণমাধ্যমের এখন দায়িত্ব। ছোটবেলা থেকেই শিশুদের শেখানো হোক কিভাবে ভিন্নতা সত্ত্বেও মানুষকে ভালোবাসতে হয়। আমাদের আগামী প্রজন্ম যেন জানে, ধর্ম মানুষকে আলাদা করে না, বরং নৈতিকতা শেখায়, ভালোবাসতে শেখায়।
একসাথে চলার আরেকটি রূপ হলো সহযোগিতা। কেউ দুর্বল হলে তাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া, কেউ বিপদে পড়লে পাশে দাঁড়ানো। এই মানবিক গুণগুলোই আমাদের সত্যিকারের মানুষ করে তোলে। মহামারির সময় আমরা দেখেছি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ কিভাবে একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছিল, কিভাবে অচেনা মানুষের জন্যও অকাতরে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল।
চেতনার এই ধারা যদি আমরা ধরে রাখতে পারি, তাহলে সমাজ থেকে অনেক সমস্যাই আপনাতেই দূর হয়ে যাবে। হিংসা, বিদ্বেষ, বিভেদ। এই সমস্ত অন্ধকার আমাদের কখনোই গ্রাস করতে পারবে না।
চন্দ্র, সূর্য, বাতাস কিংবা বৃষ্টি। কোনো কিছুরই আলাদা জাত নেই। প্রকৃতি যেমন সবার জন্য এক, মানুষকেও তেমনি হয়ে উঠতে হবে। বিভেদহীন, উদার, মানবিক।
এই সময় তাই শুধুই প্রযুক্তির উন্নয়নের সময় নয়, হৃদয়ের সম্প্রসারণের সময়। প্রয়োজন সেতুবন্ধনের। এমন এক সেতু, যা ধর্ম, ভাষা, জাতি বা গোষ্ঠীর বাধা পেরিয়ে সকলকে একই সূত্রে গেঁথে রাখবে।
আমরা যদি একসাথে হাঁটতে শিখি, তাহলে ভবিষ্যৎ হবে আরও সুন্দর, আরও শান্তিময়। মনুষ্যজীবনের প্রকৃত মানে তখনই মিলবে, যখন আমরা সব পার্থক্য ভুলে একসাথে বাঁচতে শিখব। এই বার্তাই হোক আগামী দিনের পাথেয়। একসাথে থাকো, একসাথে বাঁচো, একসাথে গড়ো মানবতার পৃথিবী।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
https://x.com/KausikChak1234/status/1919429938295312608?t=rYTDV5jEedBxChWmAkLbuw&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার মন্তব্যটি অত্যন্ত গভীর এবং সময়োপযোগী। বর্তমানে আমাদের সমাজে যে বিভাজন এবং হিংসা ছড়িয়ে পড়ছে, তা থেকে মুক্তি পেতে হলে মানবতার মূল আদর্শে ফিরে আসা অত্যন্ত জরুরি। একতা, সহমর্মিতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা, এগুলোই আমাদের সামাজিক ও মানবিক জীবনের ভিত্তি। সমাজে শান্তি এবং সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করতে হলে, আমাদের প্রথমে নিজেদের মধ্যে সম্পর্কের গভীরতা তৈরি করতে হবে, যেখানে ধর্ম, বর্ণ, জাতি কিংবা রাজনৈতিক মতভেদের চেয়ে মানবিকতা সবচেয়ে বড় গুরুত্ব পাবে।
@kausikchak123, puss ব্যালান্স কমে গিয়েছে অর্থাৎ ১০০ এর নিচে নেমে গিয়েছে। দ্রুত রিচার্জ করুন, নাহলে ভোট মিস যাবে।
করেছি দাদা