ভারতীয় রেলের একটি বিলাসবহুল ট্রেন বন্দে ভারত চড়বার অভিজ্ঞতা
ভারতীয় রেলের একটি এলিট পর্যায়ের ট্রেন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস
🙏 সকলকে স্বাগত জানাই 🙏
আপনারা জানেন ভারতীয় রেল ব্যবস্থা বিশ্বের একটি অন্যতম রেল ব্যবস্থা হিসাবে পরিচিত। আজ আপনাদের সঙ্গে তাই ভারতীয় রেলের একটি বিশেষ ট্রেনের তথ্য শেয়ার করব। পৃথিবীতে যে সকল দেশে দীর্ঘ রেল পথ আছে তাদের মধ্যে ভারত অন্যতম। আর ভারতীয় রেলের সুনাম সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে। কারণ এত দীর্ঘ রেলপথ পৃথিবীতে আর তেমন কোন দেশে নেই। ভারতীয় রেলের সব থেকে ভালো যে ট্রেনটি বর্তমানে যাত্রী পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত আছে তা হল বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। এই ট্রেনটি একটি এলিট পর্যায়ের ট্রেন এবং সমস্ত রকম সুখ স্বচ্ছন্দ এখানে উপলব্ধ আছে। বন্দে ভারত এক্সপ্রেস আসলে বুলেট ট্রেনের আদলে তৈরি করা হয়েছে। এবং এই ট্রেনের গতি অন্যান্য ট্রেনের থেকে অনেকটাই বেশি। ট্রেনটি দেখতেও কিছুটা জাপানি বুলেট ট্রেনের আদলে।
কয়েকদিন আগে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ফেরবার সময় আমার এই ভারতীয় বুলেট ট্রেনে চাপার সৌভাগ্য লাভ হয়েছিল। ট্রেনটিতে উঠবো বলে অনেকদিন ধরেই আমি বেশ উৎসাহী ছিলাম। কিছুদিন ধরেই ভাবছিলাম যে কবে আমি বন্দে ভারতের ভেতরে বসে সম্পূর্ণ ট্রেনটি প্রত্যক্ষ করতে পারব এবং অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারব। এইবার নিউ জলপাইগুড়ি থেকে হাওড়া গামী বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে আমি সম্পূর্ণ যাত্রাপথের সাক্ষী রইলাম। ট্রেনটিতে চড়বার অভিজ্ঞতা সত্যিই অসাধারণ। ট্রেনে ওঠার পর কিছু নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলাম। যে বৈশিষ্ট্যগুলি অন্য কোন ট্রেনে নেই তা বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে রয়েছে। যেমন তার মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি হল স্বয়ংক্রিয় দরজা। বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের দরজা মেট্রোর মতো অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যায়। তাই যাত্রীদের খুব সাবধানে এই ট্রেনে ওঠা নামা করতে হয়। ট্রেনটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় এবং বিভিন্ন ধরনের অত্যাধুনিক ব্যবস্থাপনা রয়েছে। এই ট্রেনে একটি মনিটরের মাধ্যমে সমস্ত রকম তথ্য সরবরাহ করা হয়। যেমন গাড়ির গতি থেকে শুরু করে পরবর্তী স্টেশন এবং তার দূরত্ব, সবকিছু যাত্রীদের কাছে সরবরাহ করা হয়। এই ট্রেনের বসবার ব্যবস্থাও খুব বিলাসবহুল এবং এলিট পর্যায়ের। তাই এই ট্রেনে যাত্রা মানে এক নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হওয়া। সবথেকে বড় কথা গতিবেগ বেশি হওয়ার কারণে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস অন্যান্য ট্রেনের তুলনায় অনেক তাড়াতাড়ি গন্তব্যে পৌঁছে যেতে পারে। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে হাওড়া আসতে এই ট্রেনের ৮ ঘন্টা লাগে মাত্র। যেখানে অন্যান্য ট্রেন ১২ থেকে ১৩ ঘন্টা নিয়ে নেয়। তাই ভারতীয় রেলের এই পরিষেবা মানুষকে যে অনেকটাই সুবিধে করে দিয়েছে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
এই ট্রেনে খাবারদাবারের ব্যবস্থাপনাও বেশ ভালো। ট্রেনে চড়ার সাথে সাথে একটি ওয়েলকাম টি দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। তারপর টিফিন এবং সবশেষে লাঞ্চ বা ডিনার দিয়ে যাত্রীকে অভিবাদন জানানো হয়। খাবারের মান ভালো। আমি নন ভেজ ছিলাম বলে আমাকে ভাত রুটি এবং মাংসের প্লেট তারা দিয়েছিল। খাবারের স্বাদ আমার বেশ ভালোই লেগেছে। সব মিলিয়ে আমার বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে চড়ার অভিজ্ঞতাও বেশ ভালো।
আপনাদের সঙ্গে আমি ভারতীয় রেলের এই বিশেষ ট্রেনের কিছু ছবি শেয়ার করলাম। ছবিগুলি দেখে বুঝতে পারবেন যে এই ট্রেন কত বিলাসবহুল এবং সুসজ্জিত।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে ও ৫% এবিবি চ্যারিটিকে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
https://x.com/KausikChak1234/status/1887728290389016636?t=KsrmbX9M7JR7TzF77k5Afg&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Daily tasks-
ছবি দেখেই বোঝা যাচ্ছে বেশ সুসজ্জিত এবং আধুনিক সুবিধা সহ ট্রেন টি। আর যেহেতু দীর্ঘ যাত্রাপথ, তাই ট্রেন টি আরাম আরাম হলে যাত্রা বেশ ভালো কাটে। বুলেট গতির হওয়ায় অন্যান্য ট্রেনের তুলনায় বেশ অনেকটা সময় ও বাঁচিয়ে দিচ্ছে- এটাও বেশ ভালো দিক বটে! সব মিলিয়ে বেশ ভালো লাগলো আপনার এক্সপেরিয়েন্স পড়ে।