অদ্ভুত এক পেশার সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করায়। জীবনের লড়াই।
আসুন অদ্ভুত এক পেশার সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করায়
🙏 সকলকে স্বাগত জানাই 🙏
মানুষের বিভিন্ন রকম পেশার মধ্যে আজ একটি বিশেষ ধরনের পেশা আপনাদেরকে দেখাবো। যে পেশাটি আপনারা কখনো কল্পনাই করতে পারবেন না। আসলে পৃথিবীর বুকে বহু মানুষ জীবনে বিভিন্ন রকম লড়াইয়ের মাধ্যমে বেঁচে থাকেন। কখনো সেই লড়াই হয় একেবারে অন্য ধারায় এবং অন্য আঙ্গিকে৷ আসলে দুবেলা খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে গেলে বিভিন্ন মানুষকে বিভিন্ন রকমের পেশায় নিযুক্ত হতে হয়। এর মধ্যেই আমি আপনাদেরকে অদ্ভুত এক পেশায় নিযুক্ত লোকের ছবি দেখাবো এবং বর্ণনার মাধ্যমে তার সেই অদ্ভুত পেশার কাহিনী আপনাদের সামনে তুলে আসব।
এই বছর কলকাতা বইমেলায় যাওয়ার সময় বইমেলার পাঁচ নম্বর গেটের সামনে এক অদ্ভুত মূর্তি চোখে পড়ে। মূর্তিটি একটি সোনালী রঙের মানুষের যিনি দুহাতে মাথার উপর বই নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন একেবারে পাথরের মত। আমি কিছুটা অগ্রাহ্য করেই তার পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে দেখলাম কিছু মানুষ খুব তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে সেই মূর্তিটির দিকে তাকিয়ে কিছু একটা পর্যবেক্ষণ করছেন৷ আমিও থমকে গেলাম কিছুক্ষণের জন্য। মনে মনে ভাবলাম একটি পাথরের মূর্তির দিকে তাকিয়ে মানুষেরা কী পর্যবেক্ষণ করছে? আমি নিজেও কিছুক্ষণের জন্য থমকে গিয়ে তারপরে গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে চললাম সেই পাথরের মূর্তিটির দিকে। যারা একদৃষ্টিতে সেই মূর্তিটির দিকে তাকিয়ে আছেন, প্রথমে তাদেরকে ভীষণ মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করলাম। তারপর ধীরে ধীরে তাকালাম মূর্তিটির দিকে। পাশে একজন মানুষ আমাকে বললেন এটি মূর্তি নয়। আসলে একজন জীবন্ত মানুষ এইভাবে পাথরের মূর্তির মত সেজে বইমেলার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন অনেক সময় ধরে। তিনি এতোটুকুও নড়াচড়া করেননি বা চোখের পাতাও ফেলেননি। আমি তা শুনে রীতিমতো হতবাক হয়ে গেলাম। কারণ মানুষটিকে দেখে হঠাৎ করে বোঝার উপায় ছিল না যে সেটি পাথরের মূর্তি নয়। আসলে একজন জীবন্ত মানুষ একেবারে মূর্তির মত দাঁড়িয়ে আছেন রাস্তার উপরে। আমি ভালো করে সেই মানুষটিকে পর্যবেক্ষণ করলাম। তারপরে ধীরে ধীরে বুঝতে পারলাম যে আমি আসলে ভুল ভেবেছিলাম। সেটি কোন পাথরের মূর্তি নয়। আসলে একজন জীবন্ত মানুষ দাঁড়িয়ে রয়েছেন একেবারে পাথরের মূর্তির মত।
এই অদ্ভুত পেশায় নিযুক্ত ব্যক্তিটিকে দেখে আমার বেশ অবাক লাগলো। কারণ মানুষ পেট চালানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের পেশা বেছে নিলেও এমন মূর্তির মত দাঁড়িয়ে আছেন তা আমি কোনদিন কখনো দেখিনি। তাই কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ভালো করে সেই ব্যক্তিকে পর্যবেক্ষণ করে এবং তার অদ্ভুত যোগ ক্ষমতার মনে মনে প্রশংসা করে আবার ঢুকে গেলাম বইমেলার দিকে। আজ সেই ঘটনার কথা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে ইচ্ছা হল। এবং ততোধিক ইচ্ছা হল সেই ব্যক্তির ছবি আপনাদের দেখাতে। কারন সেই সময়ে আমি দাঁড়িয়ে তার কিছু ছবি মোবাইলের ক্যামেরাবন্দি করেছিলাম। এখন তার ছবি দেখে আপনাদের কি মনে হচ্ছে তা অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Daily tasks-
https://x.com/KausikChak1234/status/1898417036243439748?t=ndBELcq8jiwI72-vqtZOKw&s=19
একটু আগেই তোমার পোস্টটা দেখেছিলাম কিন্তু তখন কমেন্ট করা হয়নি এখন যখন কমেন্ট করতে বসলাম তখন আবারো একবার দেখলাম। এই লোকটাকে আমরা দুজনেই একসাথে দেখেছিলাম মনে পড়ছে আর আমি তো প্রথমে ভেবেই ছিলাম লোকটি আসলে স্ট্যাচু। মানুষ যে পেটের দায়ে কত রকম কি করে এবং সেটাকে নির্ভর করে জীবন চলে তা সত্যিই ভাবলে অবাক লাগে। আমি ভাবিনি এটা নিয়ে কখনো লিখবো বলে কিন্তু তুমি যে লিখেছ তার জন্য তোমায় কুদোস।
হ্যাঁরে আমরা দুজনেই ছিলাম সেই দিন। আসলে এই লোকটি আমার নজর কেড়েছিল। এমন ভাবে যে মূর্তির মত দাঁড়িয়ে থাকা যায় তা সত্যি আমি জানতাম না। জীবনের সঙ্গে কত রকম ভাবে লড়াই করতে হয় তাই ভাবছিলাম।
জীবন বড্ড বেশী বিচিত্র, চিত্রটি দেখে আমিও বেশ অবাক হয়েছি এবং আগ্রহ নিয়ে আপনার পুরো পোষ্টটি পড়লাম। অদ্ভুত এই পেশার বিষয়টি আপনি দারুণভাবে উপস্থাপন করেছেন। অনেক ধন্যবাদ
আমার সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে এমন সুন্দর করে কমেন্ট করে পাশে রইলেন বলে অনেক ধন্যবাদ ভাই। এই লোকটি সেদিন আমাকে ভীষণ অবাক করে দিয়েছিল।
হুবুহু ভার্স্কয মনে হচ্ছে মনেই হচ্ছে না কোন ভাবে যে এনি রক্তে মাংসে গড়া সত্যি কারের মানুষ। সত্যি জিবিকা নির্বাহের জন্য অনেক পোশা দেখলেও এটি প্রথম দেখলাম।দারুণ উপস্থাপন করেছে নিজেকে। ধন্যবাদ দাদা পোস্ট টি ভাগ করে নিয়েছেন জন্য।
এই লোকটি সেদিন আমার নজর কেড়ে নিয়েছিল বলেই আমি কয়েকটি ছবি তুলেছিলাম। আসলে এমন কিছু বিচিত্র পেশা থাকে যা সত্যিই বড় অবাক করে দেয়। আমি ভাবি মানুষ কত রকম ভাবে জীবনে বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করে।