বন্ধুরা মিলে বারবিকিউ চিকেন বানিয়ে খাওয়ার অনুভূতি। লাইফস্টাইল পোস্ট।
কয়েকজন বন্ধু মিলে বানিয়ে ফেললাম বারবিকিউ চিকেন
🙏 সকলকে স্বাগত জানাই 🙏
আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে গতকাল বসেছিলাম একটু আনন্দ করবো বলে। আনন্দ করবার জন্য কী লাগে? আসলে আনন্দ করব বললেই করা যায়। তার জন্য আলাদা করে কোন আয়োজন লাগে না। শুধু সামান্য কিছু জিনিস এনে যদি একটা ছোটখাটো আয়োজন বানিয়ে ফেলা যায় তবেই কিন্তু বন্ধুরা মিলে বেশ আনন্দ করা যায়। তাই আমরা তিনজন বন্ধু ঠিক করেছিলাম মুরগির মাংস এনে বারবিকিউ করে খাব। বারবিকিউ করবার মধ্যে নতুনত্ব কিছু নেই। কিন্তু তাও সেখানে এক অনাবিল আনন্দ আছে। সকলে মিলে বসে গান-বাজনা চালিয়ে মাংস পুড়িয়ে খাওয়া যেমন আনন্দদায়ক ঠিক তেমনি এক বিশেষ অনুভূতির মুহূর্তও বটে। তাই আমরা কয়েকজন মাত্র একদিনের প্ল্যানিংএ বসে পড়েছিলাম বারবিকিউ চিকেন তৈরি করতে। আসলে এইভাবে মাংসকে কাঠকয়লায় ফেলে পুড়িয়ে খাওয়াকে অনেকে বনফায়ার বলে থাকে। কিন্তু আমরা শহুরে মানুষ তেমন বনফায়ারের আয়োজন কোথায় করব? তাই অগত্যা এক বন্ধুর বাড়িতে উঠোন থাকবার কারণে সেখানে আয়োজন করে ফেললাম সামান্য কিছু মাংসের বনফায়ার। অর্থাৎ যাকে পোশাকি ভাষায় তন্দুরি চিকেন বা বারবিকিউ চিকেন বলা হয়।
এই ধরনের আইটেম করতে গেলে কিছু মশলা এবং মাংসের প্রয়োজন হয়। আর তার সঙ্গে লাগে যথেষ্ট পরিমাণ কাঠকয়লা। আমরা সন্ধ্যাবেলা বনফায়ার করব বলে সকালেই একটি বড় মুরগি কিনে এনে তাকে কেটে ম্যারিনেট করে ফ্রিজে ঢুকিয়ে রেখেছিলাম। বিভিন্ন ধরনের মসলা মাখিয়ে মুরগির মাংসগুলিকে ম্যারিনেট করতে হয়। আসলে এটি মাংসগুলিকে নরম হয়ে যেতে সাহায্য করে। এর ফলে পুড়িয়ে ফেলার পর মাংসের পিসগুলি সিদ্ধ হয়ে একেবারে নরম হয়ে যায়। এছাড়াও সকালবেলা বেরিয়ে আমরা কিছু রান্নার মশলা, আমুল বাটার এবং কাঠকয়লা কিনে এনেছিলাম। কাঠকয়লা কিনতে গিয়ে একটি অভিজ্ঞতা হল। এই জিনিসটি সচরাচর সব ধরনের দোকানে পাওয়া যায় না। তাই জিজ্ঞাসা করে করে সঠিক দোকান থেকে কিনে আনতে বেশ অনেকটা টাইম লেগে গিয়েছিল। কিন্তু অবশেষে আমরা কাঠকয়লা জোগাড় করতে পেরেছি। আসলে শহরাঞ্চলে এই ধরনের জিনিসপত্র পাওয়া বেশ মুশকিল। তবু বারবিকিউ তৈরি করব বলে আমরা বিভিন্ন জায়গা খুঁজে অবশেষে এই প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি সংগ্রহ করে এনেছি।
![]() | ![]() |
---|
![]() | ![]() |
---|
এরপর সন্ধ্যায় শুরু হয় আমাদের নিজ হাতে বারবিকিউ চিকেন তৈরি করবার আয়োজন। প্রথমে উঠোনের মধ্যে ইট সাজিয়ে আমরা তার ভেতরে কাঠকয়লা এবং শুকনো কাঠ ফেলে একটি কুণ্ড তৈরি করি। সেই কাঠগুলি আগুন জ্বলতে যথেষ্ট সময় নিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু যখন আমরা একবার আগুন ধরিয়ে ফেলি তারপরে তা সুন্দরভাবে জ্বলতে শুরু করে। এরপরে সেই কৃত্রিম ওভেনের উপরে আমরা একটি জাল পেতে দিই। সেই জালের উপরেই মাংসগুলিকে সাজিয়ে সাজিয়ে পোড়াতে শুরু করি। আর তার সঙ্গে বড় সাউন্ড বক্সে বিভিন্ন ধরনের গান চলতে থাকে। এভাবেই আমরা ঘন্টাখানেক আনন্দ করে বারবিকিউ চিকেন নির্মাণ করতে শুরু করি। এবং তার সঙ্গে চলতে থাকে আমাদের আড্ডা। তিনজনে মিলে আমরা অনেকদিন পরে আড্ডা দিতে বসেছিলাম৷ ফলে সময়টা কোথা থেকে যে পার হয়ে গেল বুঝতেই পারিনি। এরপর যখন সমস্ত মাংসগুলো প্রস্তুত হয়ে গেল তখন আমরা একে একে খাওয়া শুরু করি। তারপর মাংসগুলি খেতে খেতে এবং গান শুনতে শুনতে আমরা সেই সুন্দর সময়টি পার করে ফেলি৷
আমরা তিনজন বন্ধু বহুদিন পরে একসঙ্গে কিছুটা সময় কাটালাম। সঙ্গে রইল বারবিকিউ চিকেন এবং কিছুক্ষণের নিখাদ আড্ডা। আর এই ঘটনাটি আপনাদের সামনে তুলে আনতে ইচ্ছা করলো। তাই আজকের লাইফ স্টাইল পোস্টে আপনাদের সামনে ব্যাখ্যা করলাম সেই কিছুক্ষণ মুহূর্তের অনুভূতি। ইতিমধ্যে শীতকাল থেকে গরম পড়া শুরু হয়ে গেছে। সকলের সাবধানে থাকুন এবং শরীর সুস্থ রাখুন।
![]() | ![]() |
---|
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://x.com/KausikChak1234/status/1896983793644589090?t=YIMnKt2_ow4gUxfRMP_t5w&s=19
Daily tasks-
বন্ধুদের সঙ্গে এমন একটি ছোট আয়োজন সত্যিই দারুণ অভিজ্ঞতা! বারবিকিউ চিকেন, গান এবং আড্ডার মেলবন্ধন এক অনন্য আনন্দের সৃষ্টি করে। আপনার গল্পটা পড়ে বেশ ভালো লাগলো । এমন সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপু এমন সুন্দর করে সুচিন্তিত মন্তব্যের মাধ্যমে পাশে থাকবার জন্য।
বন্ধুদের সাথে এমন নিখাদ আড্ডার সাথে বারবিকিউ চিকেনের স্বাদ ও চারকোলের গন্ধ। এটাই যথেষ্ট ছিল তবে ওপরে পাওনা হিসেবে তোমাদের গান এবং নানান ধরনের গল্প সময়টাকে প্রাঞ্জল করে রেখেছিল। খুব ভালো লাগলো আজকের পোস্ট দেখে।
হ্যাঁ অনেকদিন পরে বন্ধুদের সাথে একটু বসবার সুযোগ পেয়েছিলাম। তাই সব মিলিয়ে সময়টা বেশ ভালোই কেটেছে। তোর কমেন্ট পেয়ে খুব ভালো লাগলো।
অও,বন্ধুদের সঙ্গে জমিয়ে বারবিকিউ পার্টি করেছেন দেখছি।একে তো রাতের ফুরফুরে হাওয়া তার উপরে সুস্বাদু রান্না আর বন্ধুদের আড্ডা ,সবমিলিয়ে ভেসে আসা গান একটা রোমাঞ্চকর পরিবেশ যাকে বলে।দারুণ সময় উপভোগ করেছেন আশা করি।যদিও কয়লা প্রথমে জ্বলতে সময় লাগে ,পরে আবার থামানো মুশকিল।ধন্যবাদ দাদা।