রাজশাহী পুষ্পমেলা - ২০২৫ | তৃতীয় পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগ11 days ago

আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাই ঈদুল-আজহার শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক। আজকে বাংলাঃ ২৫ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩২। ইংরেজিঃ ৮ জুন, ২০২৫।বারঃ রবিবার। আমি আবারও রাজশাহী পুষ্পমেলার তৃতীয় পর্ব লিখতে বসেছি।


1000368281.jpg

তারপর আর্টিফিশিয়াল ফুলের স্টল ছেড়ে বের হলাম। বাইরের সাজানো আসল ফুলের মতো এতটাও আনন্দিত করেনি আর্টিফিশিয়াল ফুলের স্টল গুলো।


জিনিয়ার হাসি

1000289760.jpg

স্টল থেকে বের হয়ে প্রথমেই চোখে পড়লো হলুদ রঙের ছোট জিনিয়া। উজ্জ্বল হলুদ জিনিয়া ফুল। সবুজ পাতার মাঝে এ ফুল যেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক প্রাণবন্ত ছোঁয়া।

1000289756.jpg

1000289757.jpg
হলুদের পাশে গোলাপি ও ম্যাজেন্টা রঙের জিনিয়া ফুল—প্রকৃতির ক্যানভাসে তুলির টান যেন। আমি হলুদ জিনিয়া আগে দেখেছি কিন্তু গোলাপি জিনিয়া কখনো দেখিনি। আপনারা দেখে থাকলে জানাবেন।

অ্যাস্টারের রাঙা হাসি

1000289759.jpg
চতুর্থ ছবিতে দেখা যাচ্ছে গাঢ় গোলাপি অ্যাস্টার ফুল, মাঝে সোনালি হৃদয়। সূর্যকিরণের ছোঁয়ায় আরও উজ্জ্বল। এই ফুল গুলোকে আমি অনেক সময় সূর্যমুখী ভেবে ভুল করি। অনেকটাই মিল আছে, না?
1000289758.jpg
না, অল্প পার্থক্য আছে, সূর্যমুখী ফুল সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকে, মনে হয় সূর্যের সাথে আলাপ আলোচনা করে। এই
অ্যাস্টারের মনে হয় সূর্যের সাথে তেমন কথা বলার কিছু নেই, সে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। সূর্যমুখীর পাপড়ি হয় হলুদ, আর এটির পাপড়ি লাল। বাহ আরেকটা পার্থক্য পেয়ে গেছি।

রাজকীয় সাজে ডালিয়া

1000289753.jpg
এই ছবি গুলোতে নানা রঙে ফুটে থাকা ডালিয়া ফুল—গাঢ় বেগুনি, লাল-সাদা মিশ্রণ, প্রতিটি যেন আলাদা গল্প বলে। পাপড়ির ঘনত্বে ফুটে উঠেছে নান্দনিকতা।ডালিয়া ফুল যেন প্রকৃতির হাতে আঁকা এক নিখুঁত শিল্পকর্ম। প্রতিটি পাপড়ি সুবিন্যস্ত, ঘন ও প্রাণবন্ত রঙে রাঙানো। কারও গাঢ় বেগুনি, কারও বা লাল-সাদা রঙের ক্যান্ডি স্ট্রাইপের মতো ছটা। এই ফুলের সৌন্দর্যে রয়েছে এক ধরনের রাজকীয় বৈভব—যা চোখে পড়লেই মন থমকে যায়।

1000289752.jpg
ডালিয়া শুধু একটি ফুল নয়, এটি এক অনুভব—রঙের, কাঠামোর আর নান্দনিকতার। যার দিকে তাকালে মন অবচেতনে বলে ওঠে: "এ ফুল ফোটে শুধু চোখের জন্য নয়, হৃদয়ের প্রশান্তির জন্য।"
1000289751.jpg
ডালিয়ার বিশেষত্ব হলো এর পাপড়ির বাহার ও গঠন। গোলাকার হয়ে খোলা প্রতিটি স্তরে স্তরে ফুটে ওঠে অনিন্দ্য সৌন্দর্য। রোদের আলোয় কিংবা ছায়াঘেরা বিকেলে, ডালিয়া সবসময়েই নিজের রঙে আলাদা করে নজর কাড়ে। বাগানের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা এই ফুল যেন প্রকৃতির এক চুপচাপ রানি, যার সৌন্দর্য বলে দেয়—শান্ত সৌন্দর্যই সবচেয়ে গভীর সৌন্দর্য।

ছোট্ট বনসাই

1000289750.jpg
এখানে দেখতে পাচ্ছি একটি সুন্দরভাবে ছাঁটা বনসাই গাছ, ছোট টবে রাখা। যেন প্রকৃতির এক শান্ত সৌন্দর্যকে কাছ থেকে ছোঁয়ার সুযোগ।
এই ছোট্ট বনসাই শুধু একটা গাছ নয়—এ এক ধৈর্যের শিল্প, প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের মৃদু কথোপকথন। বছরের পর বছর যত্নে ছাঁটা এই গাছ যেন প্রমাণ করে—সৌন্দর্য উচ্চতায় নয়, গভীরতায় থাকে।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটি টবভরা সবুজ বনসাই, যার প্রতিটি ডালপালা সযত্নে গড়া। মোচড়ানো গড়ন, ঘন পাতার ঘনত্ব—সব মিলিয়ে গাছটি যেন প্রকৃতির সংক্ষিপ্ত উপন্যাস। মনে হয়, এই গাছের প্রতিটি বাঁক একটি অধ্যায়, যেখানে লেখা আছে সময়, ধৈর্য আর ভালোবাসার গল্প।
বনসাই আমাদের শেখায়—আয়তন নয়, ভারসাম্যই সৌন্দর্যের মূল কথা। জীবনের ছোট ছোট বিষয়কে যত্ন করে গড়ে তুললেই সৃষ্টি হয় এক অনন্য সৌন্দর্য। এই ক্ষুদ্র গাছটি তাই শুধু একটি শোভাময় উদ্ভিদ নয়, বরং এক গভীর দর্শনের বাহক।
যেখানে বড় হওয়ার প্রতিযোগিতা, সেখানে বনসাই বলে—থেমে থেকে গভীরে যাও। নিজেকে ছোট করেও অনন্ত সৌন্দর্য ধরা যায়।

পেটুনিয়ার ঝুলন্ত শোভা

1000289747.jpg

এই ছবিতে ঝুলন্ত টবে ফুটে আছে গোলাপি-সাদা পেটুনিয়া ফুল। আলো-আঁধারিতে ঝুলন্ত এই ফুল যেন মঞ্চে একক তারকা।

1000289748.jpg
পেটুনিয়া এমন এক ফুল, যা শুধু রঙে নয়—ফোটে আবেগে, কোমলতায়। ঝুলন্ত টবে ফুটে থাকা এই গোলাপি-সাদা পেটুনিয়াগুলো যেন নরম বাতাসে দুলে দুলে ভালোবাসার ভাষা বলে।
প্রতিটি পাপড়ি তুলোর মতো কোমল, রঙে মিষ্টি এক ছোঁয়া—কখনো গাঢ়, কখনো হালকা। মাঝে হলুদ বা সাদা হৃদয়, চারপাশে পাপড়ির কোমল বিস্তার। দিনের আলোতে যেমন উজ্জ্বল, রাতের আলোয় তেমনই স্বপ্নময়। সন্ধ্যার হালকা বাতাসে এই ফুলেরা যখন দুলে ওঠে, মনে হয়—কেউ যেন গোপনে ভালোবাসার চিঠি লিখছে আকাশের দিকে।
পেটুনিয়ার সৌন্দর্য শুধু বাহ্যিক নয়, এর মধ্যে আছে নিরব প্রশান্তির একধরনের ভাষা। এটি এমন এক ফুল, যা ঘর বা বারান্দাকে করে তোলে একটু বেশিই আপন। যেখানে পেটুনিয়া থাকে, সেখানেই যেন বসন্তের আবেশ লুকিয়ে থাকে চুপিচুপি।

আমার আজকের পুষ্পমেলার পোস্টটি এখানেই শেষ করছি। সকলেই ঈদের আনন্দে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।

আমার পরিচয়ঃ


আমার পুরোনাম জোনায়েদ আহমদ । স্টিমিট আইডি @junaidahmed
বাসা নেত্রকোনা সদর নেত্রকোনা । আমি অর্থনীতি বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি, বর্তমানে জবের পড়াশোনার পাশাপাশি স্টিমিট এ লিখালিখি করি। আমার প্রকৃতির ছবি তুলতে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে,বিশেষ করে ফুলের ছবি,সূর্যের অস্ত যাওয়ার ছবি,চাঁদের ছবি আর সাদাকালো বিভিন্ন ছবি।বিভিন্ন বিষয়ে গল্প লিখতেও ভালো লাগে। হলের বারান্দায় আমার কিছু গাছ আছে এগুলোর সাথে মাঝে মাঝে সময় কাটাই। আমি স্টিমিটে জয়েন করি ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। আমার এই স্বল্প সময়ে আমার বাংলা ব্লগে ক্যারিয়ার শুরু করতে পেরে খুবই আনন্দিত অনুভব করছি। আপনাদের সাথে কাজ করার সুযোগ পেয়ে খুব ভালো লাগছে।



|| আমার বাংলা ব্লগ ||
break .png
>>>>>|| ডিসকর্ড চ্যানেলে ||<<<<<
break .png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Posted using SteemPro

Sort:  

Congratulations!

Your post has been manually upvoted by the SteemPro team! 🚀

upvoted.png

This is an automated message.

💪 Let's strengthen the Steem ecosystem together!

🟩 Vote for witness faisalamin

https://steemitwallet.com/~witnesses
https://www.steempro.com/witnesses#faisalamin

 11 days ago 

চমৎকার সব ফুলের ফটোগ্রাফি দেখে চোখ জুড়িয়ে গেল। আপনি খুবই চমৎকার সব ফটোগ্রাফি গুলো উপস্থাপন করেছেন। প্রত্যেকটা ফটোগ্রাফি অসাধারণ হয়েছে।

 10 days ago 

ধন্যবাদ আপু

 9 days ago 

আপনার কাছ থেকে পুষ্প মেলার কথা শুনে বুঝতে পেরেছিলাম যে এখানে ফুল সম্পর্কে আপনি কিছু শেয়ার করতে চাচ্ছেন৷ দেখলাম যে আপনি এখানে অনেকগুলো সুন্দর ফুলের ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন৷ একই সাথে এখানে একের পর ফটোগ্রাফি গুলো যখন দেখছিলাম তখন অনেক ভালই লাগছিল৷ এখানে সবগুলো ফটোগ্রাফি আমার অনেক পছন্দ হয়েছে৷ এর মধ্যে আজকে আপনি তৃতীয় পর্ব শেয়ার করেছেন৷ পরবর্তী পর্ব দেখার আশায় রইলাম৷