মানুষ বড় আত্মপ্রেমি। অন্ধ আত্মপ্রেম।

in আমার বাংলা ব্লগ29 days ago

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,


সমস্ত ভারতবাসী এবং বাংলাদেশের বাঙালি সহযাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।


received_667804862850597.jpeg

[সোর্স](মেটা এ আই)







আশা করি আপনারা ঈশ্বরের কৃপায় সুস্থ আছেন, সব দিক থেকে ভালোও আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।



মানুষ এক বিস্ময়কর জীব। সে সৃষ্টি করে, ধ্বংস করে, ভালোবাসে, ঘৃণা করে, ত্যাগ করে আবার নিজের স্বার্থে সব কিছু ছুঁড়ে ফেলে। যুগে যুগে প্রেম, আত্মত্যাগ আর সহানুভূতির গল্প দিয়ে মানব সভ্যতা গড়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু একটু গভীরভাবে তাকালে দেখা যায়—মানুষের প্রতিটি কর্মের শিকড়ে যেন একটাই বীজ—নিজেকে ভালোবাসা।

শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত, ধনী থেকে গরিব—সবাই নিজের অস্তিত্ব, নিজের সুখ, নিজের চাওয়া-পাওয়ার বৃত্তে ঘুরপাক খায়। এমনকি যখন কেউ অপরের জন্য আত্মত্যাগ করে, সেটাও অনেক সময় আসে নিজের আত্মতৃপ্তির খাতিরে, নাকি? "আমি ভালো মানুষ" এই ভাবনাটাও তো নিজের অহংকার রক্ষারই এক রূপ।

প্রেমে, বন্ধুত্বে, পরিবারে—যেখানে আমরা নিঃস্বার্থ ভালোবাসার কথা বলি, সেখানেও একটা প্রত্যাশা কাজ করে। আমি যতটা দিচ্ছি, ততটাই যেন পাই। কেউ যখন প্রত্যাশা ভেঙে দেয়, তখনই ‘ভালোবাসা’ রাগে, ঘৃণায় বা নির্লিপ্ততায় রূপ নেয়।

মানুষ প্রকৃতপক্ষে স্বার্থপর। তার দৃষ্টিভঙ্গি, বিশ্বাস, আদর্শ—সবই নিজের সুবিধেমতো তৈরি করা। যে ধর্মে সে জন্মায়, সেটাকেই সত্য বলে মেনে নেয়, কারণ সেটাই তার পরিচয়, তার 'আমি'কে ধারণ করে। এমনকি সমাজ বা দেশ নিয়ে গর্ব করার মধ্যেও একটা ‘নিজেকে বড় মনে করার’ প্রবণতা কাজ করে।

তবে, এই আত্মভালোবাসা কি একেবারে খারাপ? না, তা নয়। নিজের অস্তিত্বকে ভালোবাসা, নিজের জন্য বাঁচার ইচ্ছা থেকেই তো শিল্প সৃষ্টি হয়, বিজ্ঞান এগোয়, সমাজ গড়ে ওঠে। কিন্তু সমস্যাটা তখনই হয়, যখন এই ভালোবাসার অতৃপ্তির কারণে অন্যকে দায়ভার দেওয়া হয়। নিজেকে ভালোবাসার দরুন নিজের চাওয়া পাওয়া হিসেব নিকেষ সবেরই দায় নিজের ওপরই বর্তায়৷ কিন্তু আমি কি পেলাম বা আমার কি নেই তার জন্য অন্যের দিকে আঙুল তোলাটা কখনই যুতসই নয়।

যে মানুষ সারাক্ষণ নিজের না পাওয়ার কারণে অন্যের দোষ বিচার করে বা নিজের নেই বলে অন্যকে দায়ী করে তারা কি সত্যিই নিজেকে ভালোবাসে? ভালোবাসে তো বটেই। আর সেই অন্ধ আত্মপ্রেমে নিজের দোষ বিচার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে৷ এর ফলে কি হয়, এই মানুষগুলি না নিজে ভালো থাকতে পারে না অন্য কাউকে ভালো রাখতে পারে। নিজের খারাপ থাকা উল্লেখ করে ফলাও করে অথচ নিজের খারাপ থাকার পেছনে নিজের দায় কতটা সেটুকু বিচার করে না।

আসলে আত্মভালোবাসাই যথেষ্ট নয়। পাশাপাশি নিজের বিচার করাও অত্যন্ত প্রয়োজন।

এই যুগে, যখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘আমি’কে প্রকাশ করাই প্রধান উদ্দেশ্য, তখন এই প্রশ্ন আরও প্রকট—মানুষ আসলেই কি অন্যকে ভালোবাসে, নাকি কেবল নিজের প্রতিচ্ছবিকে অন্যের চোখে সুন্দরভাবে দেখতে চায়?

1000205476.png


1000216462.png

পোস্টের ধরণক্রিয়েটিভ রাইটিং
কলমওয়ালানীলম সামন্ত
মাধ্যমস্যামসাং এফ৫৪
লোকেশনপুণে,মহারাষ্ট্র
ব্যবহৃত অ্যাপক্যানভা, অনুলিপি


1000216466.jpg


১০% বেনেফিশিয়ারি লাজুকখ্যাঁককে


1000192865.png


~লেখক পরিচিতি~

1000162998.jpg

আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিত গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা



কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।

🌾🌾🌾🌾🌾🌾🌾🌾


1000205458.png

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNq11oNEiVHeYi1dFPZdD9DtfDnLSeGtLw3tXF7pNDf1KxPvxfffo2xboPm7wR8jPkKYie3LXrW.png

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iQSBbshXsaBma59uahG3EZgK1iDXVoywUGGxx1xjvsB7gc2x2aoAvMJQKdwPc9f7Bh4cuj9tdr6.png

1000205505.png