An untold Yet Real Love story!( ভালোবাসায় সমর্পিত সত্য কাহিনী!)
![]() |
---|
ভালবাসা সৃষ্টিকর্তার সৃষ্ট একটি অভূতপূর্ব অনুভূতি, যেটির যথার্থ মূল্যায়ন হয় ভালোবাসার মানুষটি চিরতরে হারিয়ে গেলে!
পৃথিবীর এমন একটি ভালোবাসার নিদর্শন দেখতে অনেক পর্যটক হাজির হন! প্রথিবীর সপ্তম আশ্চর্য্য "তাজমহল"।
অথবা কথাটি যদি একটু ঘুরিয়ে কাউকে প্রশ্ন করা হয় ভালোবাসার একটি নিদর্শনের নাম উল্লেখ করতে আমার বিশ্বাস অধিক সংখ্যক মানুষ সম্রাট শাহজাহান এর তৈরি তার স্ত্রী মমতাজ বেগম এর জন্য তৈরি তাজমহল উদাহরণস্বরূপ তুলে ধরবেন।
দেখুন রাধা কৃষ্ণের ভালবাসাও কিন্তু যুগ যুগ ধরে উদাহরণ হিসেবে বর্ণিত!
তবে, আজকে আমি দুটো বিষয়ের কোনোটিই নিজের লেখায় উপস্থাপন করতে আসিনি, তবে সোর্স এর ছবি ব্যবহার করবো না বলে, ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে, রাধা কৃষ্ণের মন্দির, মূর্তি তথা তাজমহলের ছবি তুলে ধরেছি।
![]() | 👈রাধা কৃষ্ণ মন্দির |
---|---|
ভালবাসার আদর্শ উদাহরণ👉 | ![]() |
*তবে যার বিষয়ে লিখতে বসেছি, তার ছবি অনলাইনে দেখে নিতে পারেন যদি এই সত্য ভালবাসার ঘটনাটি আপনাদের আকর্ষিত করে!
হ্যাঁ! আজকে আমি আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো এমন একজন ব্যক্তিত্বের ভালোবাসার গাঁথা;
তিনি অন্য কেউ নন জামসেদজি টাটার জ্যেষ্ঠ পুত্র দোরাবজি টাটা এবং তার স্ত্রী মেহেরবাই টাটার!
অনেকেই হয়তো অবাক হবেন পড়ে! একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী তাদের আবার কি এমন ভালোবাসার গল্প থাকতে পারে?
স্টিল ইন্ডাস্ট্রি যাদের নামের শুরু থেকে জড়িত? তাদেও কি ভালবাসার কাহিনী থাকতে পারে?
এবার আপনাদের মনের কৌতূহল খানিক নিবারণ করা যাক!
বিবাহের ইতিহাসে যাচ্ছি না, তাহলে লেখা দীর্ঘায়িত হবে, কাজেই সরাসরি মুল বিষয়টি অর্থাৎ লেখার শীর্ষক এর বিষয়বস্তুতে ফেরা যাক।
তাছাড়া, আগ্রহ থাকলে উপরিউক্ত বিবাহের ইতিহাস এখন গুগল ঘাটলে অতি সহজলভ্য।
খুব অবাক লাগলেও এটা সত্যি যেদিন দোরাবজি টাটা বিয়ে করেছিলেন মেহেরবাই টাটাকে সেটি ছিল ভ্যালেন্টাইনস ডে! হাহা!😀
সে সময় কিন্তু এখনের মত করে দিনটি পালিত হতো না, তবে ওই যে কথায় আছে, জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে তিন বিধাতা নিয়ে!
- এরপরবিয়ের দ্বিতীয় বর্ষে নিজের স্ত্রীকে তিনি একটি হীরে 💎 উপহার দিয়েছিলেন, যেটি ছিল কোহিনুর হীরার চাইতে দ্বিগুণ আকারের!
- আপনারা গুগল ঘেঁটে দেখতে পারেন! আর এই হীরার নাম ছিল জুবলী হীরা ২৪৫ ক্যারেট (Jubilee diamond-245 carat)!
এখনকার বাজারদর কত আর হবে? এই ধরুন ১৩৫ কোটি টাকার মতো!
অবাক হচ্ছেন? নাকি ভাবছেন মূল্যবান উপহার দেওয়া মানেই কি সত্যি ভালোবাসা?
আবার অনেকে এটাও মনে করতে পারেন, ওনাদের অর্থ, প্রতিপত্তি ছিল তাই এত মূল্যবান উপহার দেওয়া সম্ভব হয়েছে! ইত্যাদি ইত্যাদি।
এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে লেখাটি শেষ পর্যন্ত আপনাকে পড়তে হবে! তবেই শীর্ষক এর যথার্থতা উপলব্ধি করতে পারবেন। আর সঙ্গে পেয়ে যাবেন আপনার মনের মধ্যে চলা প্রশ্নের সদুত্তর।
মানসিকতা, হ্যাঁ! এটাই একটি মানুষকে অন্যান্য অনেক মানুষ থেকে পৃথক করে, যে সময়ের কথা লেখায় উল্লেখ করছি, সেসময় মহিলারা আজকের মত স্বাধীনতা পেতেন না, তবে শাড়ি পরিহিতা মেহেরবাই টাটা একদিকে যেমন নিজের জাতীয় পোশাক পড়ে বিদেশে গিয়েছেন, তেমনি অন্যদিকে ঘোড়া চালানো থেকে গাড়ি চালানো, টেনিস খেলা এবং মহিলাদের অধিকার নিয়ে সরব হতে পিছপা হন নি!
ছায়াছবির গল্পে যেমন আপনারা প্রায়শই দেখেন, শুরুতে মজা, গান, ভালোবাসা ইত্যাদি থাকলেও মাঝে এমন একটি ঘটনা ঘটে যায়, যেটা সেই গল্পের মোড় ঘুরিয়ে দেয়!
বাস্তবে এই ভালোবাসার সত্য গল্পের পরিণতি কি হয়েছিল, সেটাই এবার লেখার হাত ধরে তুলে ধরা যাক।
টাটা স্টিলের ব্যবসা কেবলমাত্র ভারতেই সীমাবদ্ধ ছিল না, এই প্রসিদ্ধ কোম্পানি ছিল সমগ্র বিশ্বে।
এরপর সময়ের হাত ধরে ঘটলো ছন্দপতন! কারণ, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ।
এই বিশ্বযুদ্ধের শেষে টাটা কোম্পানিকে কোমর ভেঙে যাওয়ার মত পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল!
খারাপ সময় এতটাই ভয়ংকর ছিল যে, টাটা কোম্পানির কর্মচারীদের বেতন দেবার সামর্থ ছিল না দোরাবজি টাটার!
কোম্পানি প্রায় বন্ধ হবার মুখে, আর ঠিক এই সময় এগিয়ে এসেছিলেন তার পাশে আয়রন লেডি মেহেরবাই টাটা।
কিভাবে? হ্যাঁ, সেটাই এবার জানাবো আপনাদের।
নিজের সমস্ত গহনা সহ বের করে দিলেন, নিজের স্বামীর কাছ থেকে উপহারস্বরূপ পাওয়া সেই দামী হীরা, এবং নিজের স্বামীকে সবকিছু বন্দক দিয়ে সমস্যার সমাধানের পরামর্শ দিলেন।
বহু নির্মাণের ঊর্ধ্বে আজকে উল্লেখিত নির্মাণ | ![]() |
---|---|
![]() | পরিস্থিতি একমাএ প্রকৃত ভালোবাসার সংজ্ঞা বহন করে! |
তবে, স্বামী প্রথমে রাজি না হলেও, পরিস্থিতি থেকে উদ্ধারের জন্য শেষমেশ সেই পথেই হেঁটেছিলেন।
কারণ, গরীব কর্মচারীদের কিছুতেই বঞ্চিত করা যাবে না, তাই সমস্ত অলংকার বন্দক এর বিনিময়ে যে এক্ কোটি টাকা তিনি সেই সময় পেয়েছিলেন, সেটা দিয়ে তিনি শুধু কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করেছিলেন, তাই নয়! পাশাপশি নিজেদের ভেঙে পড়া ইস্পাত কোম্পানিকে পুনরুজ্জীবিত করে তুললেন কিছু বছরের মধ্যেই।
এরপর, তিনি নিজের স্ত্রীর বন্দক রাখা সমস্ত গহনা সমেত সেই মূল্যবান হীরা পুনরায় গিয়ে এনে দিয়েছিলেন মেহেরবাই টাটাকে।
কি ভাবছেন মধুরেন সমাপয়েত? নাহ্! ভালবাসার আসল গল্প শুরু হলো এরপর, যখন মেহেরবাই এর বয়স পঞ্চাশ, তার শরীরে ধরা পড়লো ব্লাড ক্যান্সার!
আর, সেই সময় ভারতে এই মারণ রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল না, তাই স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য পাড়ি দিতে হয়েছিল বিদেশে, তবে বহু নামকরা ডাক্তার শেষমেশ মেহেরবাই কে বাঁচাতে সক্ষম হলেন না।
স্ত্রীর মৃত্যু মন থেকে মেনে নিতে পারেনি দোরাবজি টাটা! তাই তার স্ত্রীর মৃত্যুর একবছর বাদে তিনিও ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে পরলোকে পাড়ি দিয়েছিলেন।
তবে হ্যাঁ! তার স্ত্রীর যন্ত্রণা দোরাবজিকে ভিতর থেকে নাড়িয়ে দিয়েছিল!
আর, ঠিক সেই কারণে, যে মাসে তিনি মারা যান, ঠিক তার এক্ মাসের মধ্যেই তিনি তাঁর স্ত্রীকে উপহার দেওয়া মূল্যবান হীরে বিক্রি করে দিয়ে তৈরি করেন
![]() | ভালোবাসার প্রতীকী তবে নিঃস্বার্থ নয়(ব্যাক্তিগত অভিমত) 👈 |
---|
শাহজাহান যদিও তাজমহল তৈরির পরে শোনা যায় মিস্ত্রীদের আঙুল কেটে নিয়েছিলেন, যাতে দ্বিতীয় তাজমহল তৈরি না হয়, তবে দোরাবজি টাটা বলে গিয়েছিলেন, ভারতের সর্বত্রই যেনো এই ক্যান্সার হাসপালের শাখা গড়ে ওঠে!
হ্যাঁ! স্ত্রীর যন্ত্রণা তাকে ভাবতে বাধ্য করেছিল বাকি সেই সকল মধ্যবিত্ত মানুষদের চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তার কথা, যেটা সেই সময় ভারতে ছিল না।
তাই স্ত্রীকে উৎসর্গ করে দোরাবজি টাটা তাঁর স্ত্রীকে দেওয়া মূল্যবান হীরে বিক্রি করে এই হাসপাতাল তৈরি করেছিলেন মৃত্যুর একমাস আগে।
বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এই হাসপাতালের শাখা রয়েছে, যেমনটি দোরাবজি টাটা বলে গিয়েছিলেন, আরো জানলে অবাক হবেন, এখানে এখন ভিন দেশী মানুষ চিকিৎসা পেতে আসেন, সাথে বহু মানুষ, শিশু বিনামূল্যে এখানে চিকিৎসা পেয়ে থাকেন।
- এবার বলুন তো, কোন ভালোবাসার সৌধ আপনার কাছে অধিক আকর্ষণীয় মনে হচ্ছে?
ব্যাক্তিগত ভাবে আমাকে এই দুটি মানুষের মানসিকতা ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে ভিতর থেকে! ভালবাসার পরিভাষা বুঝতে সাহায্য করেছে।
একটা শিক্ষা থেকে কিভাবে সামগ্রিক সামাজিক পরিবর্তন সম্ভব সেটাও এদের জীবন কাহিনী থেকে শেখার সুযোগ পেয়েছি।
![]() | ভালবাসায় উৎসর্গিত লাল গোলাপ |
---|
এটাই তো ভালোবাসা, যেখানে শুধু নিজে পাওয়া নয়, অথবা নিজের কাছের মানুষের জন্য কিছু করা নয়, প্রয়োজন এমন কিছু সৃষ্টির নিদর্শন রেখে যাওয়া যেটি একটি উদাহরণ হিসেবে অক্ষুণ্ন থাকে যুগ যুগ ধরে!
এটাই তো প্রকৃত ভালবাসাকে সম্মান জানাবার উৎকৃষ্ট উদাহরণ, তাই না?
কি এখন আপনাদের মনের প্রশ্নগুলোর যথাযত উত্তর পেলেন তো?


0.00 SBD,
0.06 STEEM,
0.06 SP
I appreciate your support 😊
💦💥2️⃣0️⃣2️⃣5️⃣ This is a manual curation from the @tipu Curation Project
@tipu curate